- ইসলামী গান ও
- কবিতায় ভ্রান্ত
- আক্বীদা
- -মুহাম্মাদ আব্দুল হামীদ
- সূচনা :
- কুরআন মাজীদের আয়াত ও
- হাদীছে নববী দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত
- হয় যে, মানুষের ইবাদত ও সৎ আমল কবুল
- হওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে ঈমান-
- আক্বীদা বিশুদ্ধ হওয়া। আর
- তা হচ্ছে শিরক মুক্ত নির্ভেজাল
- তাওহীদ ভিত্তিক আক্বীদা হওয়া।
- নানা কারণে অনেক আগে থেকেই
- বাংলাদেশের মুসলিম
- সমাজে আক্বীদা ও
- আমলে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
- ফলে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ
- ধর্মভীরু হওয়া সত্তেবও
- আক্বীদা নির্ভুল না হওয়ার
- কারণে পরকালীন
- জীবনে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের
- অন্তর্ভুক্ত হয়ে চলেছেন। তাই আমল
- করার পূর্বে সঠিক আক্বীদা পোষণ
- করা ও
- তা ব্যাপকভাবে চর্চা করা প্রতিটি মুসলিমের
- দায়িত্ব ও কর্তব্য।
- দেশে প্রচলিত কতিপয় ভ্রান্ত
- আক্বীদা :
- বাংলাদেশের মুসলিম
- সমাজে প্রচলিত ভ্রান্ত
- আক্বীদা সমূহের প্রধান বিষয়
- হচ্ছে আল্লাহর সত্তা এবং তাঁর নাম ও
- গুণাবলী সম্পর্কে ভুল বিশ্বাস।
- দ্বিতীয় বিষয়টি হ’ল মহানবী শেষ
- নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পর্কে ভুল
- ধারণা ও বিশ্বাস। যুগ যুগ ধরে প্রচলিত
- ভুল ধারণা ও বিশ্বাসের মূল
- কারণগুলি নিম্নরূপ :
- ১. দেশের ধর্মীয় ও সাধারণ
- শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠ্যক্রমে কুরআন ও
- ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক সঠিক আকাইদ
- শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকা।
- ২. তাক্বলীদে শাখছী বা অন্ধ
- ব্যক্তিপূজা। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ
- হাদীছে বর্ণিত সঠিক আক্বীদা গ্রহণ
- না করে মাযহাবের দোহাই
- দিয়ে তার অপব্যাখ্যা করা।
- ৩. আলেম ও বক্তাদের
- মুখে শোনা কথা বাছ-বিচার
- না করে গ্রহণ করা ও তা প্রচার করা।
- ৪. দলীল-প্রমাণ ছাড়া আলেমগণ
- ধর্মীয় বই-পুস্তকে জাল-যঈফ বর্ণনা ও
- ভিত্তিহীন বানোয়াট
- কথা লিখে থাকেন। সাধারণ শিক্ষায়
- শিক্ষিত কবি-সাহিত্যিকগণ আলেম
- লেখকদের পদাংক অনুসরণ করে নিজ
- রচিত কবিতা, ইসলামী গান ও গযল,
- প্রবন্ধ
- এবং সিরাতুন্নবী গ্রন্থে সেসব
- ভ্রান্ত আক্বীদা প্রচার করেন।
- প্রসঙ্গ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য :
- বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের
- ক্রমবিকাশের ইতিহাসে কাব্য
- সাহিত্যে ইসলামী ভাবধারা ও
- ঐতিহ্য সৃষ্টিতে মুসলিম কবি-
- সাহিত্যিকগণের অসামান্য অবদান
- রয়েছে। বলতে গেলে মুসলিম
- বাংলা সাহিত্যের যাত্রা শুরু হয়
- আমাদের প্রিয় নবী ও রাসূল হযরত
- মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর প্রশংসামূলক
- নানা কথা নিয়ে। বিশেষ করে পুঁথি-
- সাহিত্যের মাধ্যমে না‘ত বা রাসূল
- প্রশস্তি ব্যাপক আকারে প্রকাশিত হয়।
- ষোড়শ শতকের শেষার্ধ
- থেকে মুসলিম কবিগণ মুহাম্মাদ
- (ছাঃ)-এর জীবনের বিভিন্ন দিক
- নিয়ে কাব্য রচনা শুরু করেন। কিন্তু
- লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, সেই শুরুকাল
- থেকেই কবিগণ কাব্য রচনার
- সূচনাতেই রাসূল (ছাঃ)-এর
- প্রশস্তি গাইতে গিয়ে আবেগ
- তাড়িত হয়ে অথবা জ্ঞানের
- সীমাবদ্ধতার কারণে মুহাম্মাদ
- (ছাঃ)-কে অতিমাত্রায়
- ভক্তিভরে ‘অতিমানব’ অথবা আল্লাহর
- ‘সমকক্ষ’ জ্ঞান করেছেন। বিশেষত
- বাংলা কবিতা ও কাব্য
- সাহিত্যে ‘নূরনবী’ প্রসঙ্গটি বারবার
- উল্লেখ করা হয়েছে।
- যেমন সপ্তদশ শতকের শ্রেষ্ঠ
- কবি সৈয়দ আলাওল তাঁর ‘পদ্মাবতী’
- কাব্যের সূচনা করেছেন এভাবে-
- ‘পূর্বেতে আছিল প্রভু নৈরূপ আকার।
- ইচ্ছিলেক নিজ সখা করিতে প্রচার।
- নিজ সখা মহাম্মদ প্রথমে সৃজিলা।
- সেই যে জাতির মূলে ভূবন নিরমিলা।
- তাহার পিরিতে প্রভু সৃজিল সংসার।
- আপনে কহিছে প্রভু কোরান মাঝার।
- [1]
- এখানে কবি আল্লাহকে নিরাকার
- সত্তা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। অথচ
- সঠিক আক্বীদা হল আল্লাহর আকার
- আছে। তিনি নিরাকার নন। তবে তাঁর
- সাথে অন্য কিছুর সাদৃশ্য নেই
- (শূরা ৪২/১১) ।
- কবি মুহাম্মাদ খান ‘মকতুল হুসেইন’
- কাব্যের শুরুতে মহানবী (ছাঃ)-এর
- প্রশস্তি এভাবে বর্ণনা করেছেন :
- মুহাম্মাদ নবী নাম হৃদয়ে গাঁথিয়া
- পাপীগণ পরিণামে যাইবে তরিয়া।
- দয়ার অাঁধার নবী কৃপার সাগর
- বাখান করিতে তার সাধ্য আছে কার।
- যার প্রেমে মুগ্ধ
- হইয়া আপে নিরঞ্জন
- সৃষ্টি স্থিতি করিলেক এ চৌদ্দ ভূবন।
- [2]
- অষ্টাদশ শতকের কবি সৈয়দ
- হামজা পুঁথিকাব্যে রাসূল
- প্রশস্তি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
- মোহাম্মদ নামে নবী সৃজন করিয়া
- আপনার নূরে
- তাঁকে রাখিলা ছাপাইয়া।[3]
- আধুনিক বাংলা কাব্য
- সাহিত্যে ‘নূরনবী’ প্রসঙ্গ :
- মুসলিম জাগরণ ও
- ইসলামী চেতনা সৃষ্টির
- দিশারী রূপে আধুনিক বাংলা কাব্য-
- সাহিত্যে কবি গোলাম
- মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪), জাতীয়
- কবি কাযী নজরুল ইসলাম
- এবং কবি ফররুখ আহমদ (১৯১৮-১৯৭৪)
- স্মরণীয় হয়ে আছেন। ইসলাম ও মুসলিম
- ঐতিহ্যের বিচিত্র রূপ
- তাঁরা ইসলামী গান ও কবিতার মধ্য
- দিয়ে সুনিপুণভাবে দক্ষ শিল্পীর মত
- চিত্রিত করেছেন। তাঁদের অবদান
- অনস্বীকার্য। তা সত্তেবও প্রচলিত
- ভুল কথার অন্ধানুসরণ করে তাঁরাও ভুল
- আক্বীদা কাব্যাকারে লিখে গেছেন।
- এখানে কয়েকজন প্রথিতযশা কবির
- লিখিত কবিতার কিছু চরণ উল্লেখ
- করছি।
- কবি গোলাম মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪) :
- কবি গোলাম মোস্তফা মুসলিম
- নবজাগরণের কবি। তাঁর সাহিত্যকর্ম ও
- চিন্তাধারায় ইসলামী তাহযীব ও
- তামাদ্দুন এবং মুসলিম ঐতিহ্যের
- প্রকাশ ঘটেছে। মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর
- প্রতি গভীর অনুরাগ ও
- ভালবাসা থেকেই তিনি ‘বিশ্বনবী’
- রচনায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন
- বলে মনে হয়। কিন্তু
- দুঃখজনকভাবে ‘বিশ্বনবী’
- গ্রন্থে তিনি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-
- কে ‘নূরের তৈরী নবী’
- রূপে আখ্যায়িত
- করে মিথ্যা কথা প্রচারে ভূমিকা রেখেছেন
- এবং বিশ্বনবীর সুমহান
- মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করেছেন।
- তাছাড়া তার রচিত না‘তে রাসূল-
- নিখিলের চির সুন্দর সৃষ্টি
- আমার মুহাম্মাদ রাসূল,
- আমার ….।
- নূরের রবি যে আমার নবী
- পূর্ণ করুণা ও প্রেমের ছবি
- আমার …।[4]
- তারপর আরো অগ্রসর হয়ে কবি গীত
- রচনা করলেন এভাবে-
- তুমি যে নূরের রবি
- নিখিলের ধ্যানের ছবি
- তুমি না এলে দুনিয়ায়
- অাঁধারে ডুবিত সবি।
- ইয়া নবী সালাম আলাইকা
- ইয়া হাবীব সালাম আলাইকা
- সালাওয়া তুল্লা আলাইকা।
- চাঁদ সুরুয আকাশে আসে
- সে আলোয় হৃদয় না হাসে
- এলে তাই হে নব রবি
- মানবের মনের আকাশে
- ইয়া নবী সালাম আলাইকা
- …..।
- রাসূলকে ‘নূরনবী’ আখ্যায়িত
- করে ভ্রান্ত আক্বীদাপূর্ণ উপরোক্ত
- গীত কবিতাটি গীতিকার
- কবি গোলাম মোস্তফা ও বিখ্যাত
- কণ্ঠশিল্পী আববাস উদ্দীন আহমদ-এর
- দ্বৈত কণ্ঠে কলিকাতায় তৎকালীন
- গ্রামোফোন কোম্পানীতে রেকর্ড
- হয়।[5] তৎপর তা ‘বাংলা মীলাদ’ নাম
- ধারণ করে বাংলা মুলুকে ‘মৌলুদ’
- অনুষ্ঠানে ‘কিয়াম’
- কালে বাংলা ‘দরূদ ও সালাম’
- রূপে পাঠ করার কিংবদন্তীর
- মর্যাদা (?) অর্জন করেছে। আজও
- বাংলা অঞ্চলের সর্বত্র
- সমানভাবে নবীর উপর সালাম
- পৌঁছানোর নামে বাংলা কবিতার
- সুর মূর্ছনা মীলাদ প্রেমিকদের
- হৃদয়তন্ত্রীতে ঝংকার তোলে।
- ভাবতে অবাক লাগে, একজন
- বাঙালী কবি রচিত গীত কবিতা দরূদ
- ও সালাম রূপে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের
- অংশ ও উপকরণে পরিণত
- হ’তে পারে কিভাবে? এ দেশের
- আলেমগণ কিভাবে দ্বীন ইসলামের
- এই বিকৃতি চোখ
- বুঁজে মেনে নিয়েছেন, সেটাই
- প্রশ্ন।
- কাযী নজরুল ইসলাম(মৃঃ বাংলা ১৩০৬/১৯৭৮ইং) :
- জাতীয় কবি কাযী নজরুল ইসলাম
- আমাদের গর্ব। তাঁর কবিতা,
- ইসলামী গান ও গযল
- এবং না‘তে রাসূল পাঠে আমরা মুগ্ধ
- ও বিমোহিত হই। নবজাগরণে অনুপ্রাণিত হই।
- আমরা নির্দ্বিধায়
- বলতে পারি বাংলা কাব্য
- সাহিত্যের বিশাল আঙিনায় তাঁর
- রচিত ইসলামী কবিতা ও
- না‘তে রাসূল নিজস্ব মহিমায় ভাস্বর
- হয়ে আছে। তা সত্তেবও কবির
- অনেক না‘তে রাসূল ও ইসলামী গান
- ভুল আক্বীদায় কলুষিত হয়েছে।
- নিম্নে কয়েকটি না‘তে রাসূলের
- দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হ’ল-
- ১. মুহাম্মাদ নাম যতই জপি ততই মধুর
- লাগে
- ঐ নামে এত মধু থাকে কে জানিত
- আগে
- মুহাম্মাদ নাম যতই জপি…..।
- ২. আমার মুহাম্মাদ নামের ধেয়ান
- হৃদয়ে যার রয়।
- ৩. নাম মুহাম্মাদ বোলরে মন, নাম
- আহমদ বোল।
- ৪. মুহাম্মাদ নাম জপেছিলি বুলবুলি তুই
- আগে
- তাই কিরে তোর কণ্ঠেরি গান এতই
- মধুর লাগে।
- ৫. মুহাম্মাদ মোর নয়নমণি মুহাম্মাদ
- নাম জপমালা
- মুহাম্মাদ নাম শিরে ধরি, মুহাম্মাদ
- নাম গলে পরি।[6]
- ফররুখ আহমাদ (১৯১৮-১৯৭৪) :
- বাংলা সাহিত্যের আধুনিক
- কাব্যধারায় ইসলামের গৌরব
- মহিমা পুনরুদ্ধার ও মুসলিম
- পুনর্জাগরণের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার
- শ্রেষ্ঠ রূপকার ছিলেন কবি ফররুখ
- আহমদ। তাঁকে বলা হয় ‘মুসলিম
- রেঁনেসার কবি’। সকল
- জড়তা পায়ে দলে জেগে উঠার
- হাতছানি রয়েছে তাঁর কাব্য ও
- কবিতায়। এতদসত্তেবও সমাজের
- চলমান ধ্যান-
- ধারণা দ্বারা কবি কিছুটা বিচ্যুৎ-
- বিভ্রান্ত হয়েছেন। যেমন
- একটি না‘তে রাসূল
- লিখতে গিয়ে কথিত ‘নূরনবী’
- নামে ভ্রান্ত আক্বীদা তিনিও
- প্রকাশ করেছেন এভাবে-
- ওগো নূরনবী হযরত
- আমরা তোমারি উম্মত।
- তুমি দয়াল নবী,
- তুমি নূরের রবি,
- তুমি বাসলে ভাল জগত জনে
- দেখিয়ে দিলে পথ।
- আমরা তোমার পথে চলি
- আমরা তোমার কথা বলি
- তোমার আলোয় পাই যে খুঁজে
- ঈমান, ইজ্জত।
- সারা জাহানবাসী
- আমরা তোমায় ভালবাসি,
- তোমায় ভালবেসে মনে
- পাই মোরা হিম্মত।[7]
- বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম
- দেশে সরকারীভাবে শিক্ষার
- প্রাথমিক স্তরে শিশু-কিশোরদের
- জন্য পাঠ্যপুস্তকে মহানবী (ছাঃ)
- সম্পর্কে মারাত্মক এক
- মিথ্যা আক্বীদা পরিবেশন করা খুবই
- পরিতাপের বিষয়। মানব
- জীবনে প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব
- অপরিসীম ও সুদূরপ্রসারী। আজকের
- শিশু-কিশোরগণ
- আগামী দিনে মুসলিম সমাজের
- কান্ডারী। শিশু-কিশোরদের মন
- কাদামাটির মত কোমল। এ সময়
- তাদেরকে যেমন খুশি তেমন
- করে গড়ে তোলা যায়। এ সময়ের
- শিক্ষা পাথরে খোদিত নকশার ন্যায়।
- তাই শিক্ষার প্রাথমিক
- স্তরে কোমলমতি কিশোর মনের
- গহীন কোণে আমাদের প্রিয় রাসূল
- মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পর্কে ভ্রান্ত
- আক্বীদা-বিশ্বাস শিখিয়ে ‘বিষ
- বৃক্ষের’ উপর তাদের অনাগত ভবিষ্যত
- জীবনের ভিত রচনা করা হচ্ছে।
- সরকার ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কমিটির
- সম্মানিত সদস্যগণের প্রতি আবেদন,
- ভবিষ্যতে কোন কবিতা ও প্রবন্ধ
- পাঠ্যপুস্তকের জন্য নির্বাচন করার
- প্রাক্কালে ভুল-শুদ্ধ যাচাই-বাছাই
- করবেন।
- বিল্লালের গযল, চরমোনাইয়ের গযল,
- আমার প্রিয় ইসলামী গান, শাহী গযল
- প্রভৃতি নামকরণে বাজারে প্রচুর
- ইসলামী গযলের বই-পুস্তক
- পাওয়া যায়। এ সকল বই-পুস্তকে হাম্দ ও
- না‘তের নামে আল্লাহ ও রাসূল
- (ছাঃ) সম্পর্কে নানা প্রকার ভ্রান্ত ও
- শিরক মিশানো আক্বীদা বিস্তার
- লাভ করছে। স্কুল ও মাদরাসার
- কচিকাঁচা বালক-বালিকারা সেইসব
- বই থেকে গযল মুখস্থ
- করে মীলাদুন্নবী-
- সীরাতুন্নবী অনুষ্ঠানে, ওয়ায-
- মাহফিলে গাইতে থাকে।
- ওয়ায়েযীন ও বক্তাগণ
- ইসলামী জালসায় সুর করে গযল
- গেয়ে থাকেন। বিশেষ বিশেষ
- দিবসে রেডিও
- এবং টেলিভিশনে ধর্মীয়
- অনুষ্ঠানের নাম দিয়ে নামজাদা কণ্ঠ
- শিল্পীগণ ইসলামী সঙ্গীত
- পরিবেশন করেন। পথে-প্রাপ্তরে,
- ফসলের মাঠে কৃষক-শ্রমিক কাজ
- করতে করতে ইসলামী গান গায়।
- নদীর বুকে নৌকার মাঝিরা এসব
- গান গায়। কবি-সাহিত্যিকরা কেউ
- বুঝে কেউ
- না বুঝে সেগুলো লিখেছেন। মানুষ
- তা কণ্ঠে তুলে নিয়ে দিবা-
- রাত্রি গাইছে। কেউ বুঝে, কেউ
- না বুঝে। সকলেই
- নিজেকে তাওহীদী আক্বীদায়
- বিশ্বাসী খাঁটি মুসলিম
- বলে ধারণা করে। যদিও তার
- কণ্ঠে গাওয়া সঙ্গীতটি তাকে ইসলাম
- থেকে দূরে নিয়ে যায়।
- আল্লাহ তা‘আলা এবং রাসূল (ছাঃ)
- সম্পর্কিত ভ্রান্ত আক্বীদার
- বিষমিশ্রিত
- কয়েকটি ইসলামী সঙ্গীতের দৃষ্টান্ত
- নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল-
- ১. নবী মোর পরশমণি, নবী মোর
- সোনার খনি
- নবী নাম জপে যে জন সেই
- তো দোজাহানের ধনী।
- নবী মোর নূরে খোদা তার তরে সকল
- পয়দা
- আদমের কলবেতে তারই নূরের
- রওশনী…
- নবী মোর পরশমণি, নবী মোর
- সোনার খনি।[8]
- প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আব্দুল আলীমের
- কণ্ঠে এই সঙ্গীতটি সরকারী প্রচার
- মাধ্যমে সর্বদাই প্রচারিত হয়।
- গণমানুষের নিকট সঙ্গীতখানি খুবই
- জনপ্রিয়। কিন্তু এর ভিতর এমন সব বিষয়
- রয়েছে, যার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন
- করলে শিরকে আকবর (বড় শিরক) হয়
- এবং মানুষকে ইসলাম থেকে খারিজ
- করে দেয়।
- ২. সব মানুষের সেরা মানুষ
- নবীজি আমার
- নূরের বাতি দাও জ্বেলে দাও
- নয়নে আমার।
- তোমার দয়ার কাঙাল আমি
- কাঁদি সারা দিবস যামী।
- দূর কর দূর কর মনে মিটাও অাঁধিয়ার।[9]
- ৩. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদ
- রাসুল
- ……
- নূরের নবী প্রেমের
- ছবি নাইকো তাহার তুল,
- ও ভাই নাইকো তাহার তুল
- লা ইলাহা…..।[10]
- ৪. দূর আরবে ফুটেছিল একটি নূরের ফুল
- (২ বার)
- সে ফুল আমার
- কমলীওয়ালা রাসূলে মাকবুল
- ……
- নূর নবীজীর দরূদ
- তাকে করে যে আকুল…
- রাসূলে মাকবুল, আমার
- রাসূলে মাকবুল।[11]
- ৫. দিবা নিশি জপি আমি আল্লাহ
- নবীর নাম
- ঐ নামের গুণে পুরবে জানি (২ বার)
- আমার মনস্কাম
- আল্লাহ নবীর নাম
- ……
- ঐ নামে যে পরবে মালা, জীবন
- হবে তার উজালা
- …. আল্লা নবীর নাম।[12]
- ৬. ডেকে লও রাসূলুল্লাহ,
- রওজা পাকের কিনারে
- আমি সহিতে পারি না বিরহ জ্বালা,
- ধন্য কর দীদারে
- আমি কেঁদে কেঁদে হইগো সারা,
- ধন্য কর দীদারে।
- আজো রওজায় শুয়ে থেকে হায়,
- কাঁদেন তিনি উম্মাতের মায়ায়।[13]
- ৭. নূরুন আলা নূর মুহাম্মাদ নূরের
- খাজিনা
- তোমার নূরের বদন
- দেখতে আমি দেওয়ানা।
- তোমার নূরে জগৎ জাহান
- সৃজিয়াছেন আল্লাহ মহান
- ……..
- তোমার নূরের
- লোভে লোভী তামাম দুনিয়া।
- তোমার
- নূরে পয়দা হয়ে ফেরেশতাদের
- সিজদা লয়ে
- পাইল তাজীম আদম নবী তারই
- উছিলায়
- তোমার নূরের তাজাল্লীর ঐ
- ইশকে দেওয়ানা।[14]
- -মাওলানা আ.জ.ম. অহিদুল আলম।
- ৮. মরণকালে দিও
- গো দেখা হে প্রিয় রাসূল আমায়
- হৃদয় মাঝে তোমারি নাম
- জপি সারাক্ষণ।[15]
- ৯. নবী রাসূলকে মুর্দা বলে কোন
- সে অবুঝ দল
- ……
- নবী রাসূলগণ কবর
- শরীফে জিন্দা আছেন হায়
- মূসা নবীকে একদা রাসূল নামাজ
- হালে পায়।
- মোদের নবী হায়াতুন্নবী আছেন
- জিন্দা হালে
- মোদের লাগি দোয়ায় রত আছেন
- সাঁঝ সকালে।
- উম্মতেরা করছে কি কাজ
- নবী দেখতে পায়
- সেই নবীকে মুর্দা বলা কাদের
- শোভা পায়।
- ……
- মাযহাব মানা ফরজ বলে সঠিক
- আলেমেরা
- মাযহাব
- যারা ছাড়িবে তারা হবে যে গোমরা
- কোন বাতিল দল মাযহাব
- মানে না মোদের জামানায়
- সত্য আলোর
- রশ্নি ছেড়ে অাঁধারে কাতরায়।[16]
- …. মাঃ হায়দার হুসাইন
- ১০. ও গো নবী সরোয়ার তুমি হাবীব
- আল্লার
- …….
- সৃষ্টি করে নূরকে তোমার
- অতি তাজীমে
- সবার আগে রাখেন
- খোদা আরশে আজীমে
- সে পাক নূরেতে তোমার
- গড়েন তামাম সংসার
- সৃষ্টি হল আরশ, কুরসি, জমিন ও আসমান।
- …..
- পেলে দিদার প্রভুর
- নূরে মিলে গেল নূর।[17]
- -মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান।
- ১১. সব নবীদের
- সেরা তুমি আখেরী রাসূল,
- ……..
- পয়দা হল নিখিল জাহান
- তোমারি পাক নূরে
- ধরা হতে অাঁধার
- কালো পালিয়ে গেল দূরে।[18]
- – মাওলানা আ.জ.ম. ওবায়দুল্লাহ
- ১২. নূর মুহাম্মাদ ছল্লাল্লাহু সব নবীর
- সুলতান
- তুমি লাহুতের মেহমান,
- ………….
- চাঁদ-সুরুজে তোমার দ্যুতি
- গ্রহ তারায় তোমার জ্যোতি
- আরশ ফালাক সকল তোমার
- নূরেতে রৌশন।[19]
- -মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান।
- জনৈক কবি লিখেছেন,
- আকার কি নিরাকার সেই রববানা
- আহমদ আহাদ বিচার হলে যায় জানা
- আহমদ নামেতে দেখি
- মিম হরফে লেখেন নবী
- মিম গেলে আহাদ বাকী
- আহমদ নাম থাকে না।
- আরেকজন কবি লিখেছেন,
- আহমদের ঐ ‘মিম’-এর পর্দা
- উঠিয়ে দেখরে মন
- দেখবি সেথা বিরাজ করে
- আহাদ নিরঞ্জন।[20]
- একজন মুসলিম গীতিকারের রচিত
- কথিত ভক্তিমূলক গান দেশের
- বিখ্যাত
- কণ্ঠশিল্পীরা সরকারী প্রচার
- মাধ্যমে সর্বদাই গেয়ে থাকেন। যার
- কথাগুলি খুবই আপত্তিজনক।
- কথাগুলি হ’ল-
- ছায়া বাজি পুতুল রূপে বানাইয়া মানুষ
- যেমনি নাচাও তেমনি নাচি পুতুলের
- কি দোষ
- তুমি হাকিম হইয়া হুকুম কর,
- পুলিশ হইয়া ধর
- সর্প হইয়া দংশন কর
- ওঝা হইয়া ঝাড়।
- তুমি মার তুমি বাঁচাও
- তুমি খাওয়াইলে আমি খাই, আল্লাহ…
- এই যে দুনিয়া কিসের লাগিয়া
- এত যত্নে গড়াইলেন সাঁই
- এই যে দুনিয়া……।
- হিন্দু ধর্মাবলম্বী পন্ডিত শ্রীমৎ
- শংকরাচার্য্য অদ্বৈতবাদ মতবাদ
- প্রচার করেছেন। যার সারকথা হ’ল
- সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টি অভিন্ন বস্ত্ত।
- জগতে যা কিছু বিদ্যমান তার সবকিছুই
- স্রষ্টার অংশ বিশেষ। যার আরেক নাম
- সর্বেশ্বরবাদ। যার অর্থ সব জড় ও জীব
- জগতের মধ্যেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব
- আছে। এই বিশ্বাস থেকেই
- হিন্দুরা সকল সৃষ্ট বস্ত্তর পূজা করার মধ্য
- দিয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করার
- দাবী করে।
- খৃষ্টানরা দাবী করে যে, ঈশ্বর
- সর্বপ্রথম তার নিজের ‘যাত’
- বা সত্তা থেকে ‘কালেমা’ বা পুত্র
- যীশু খৃষ্টকে সৃষ্টি করেন এবং তার
- থেকে সকল
- সৃষ্টিকে তিনি সৃষ্টি করেন। খৃষ্ট
- ধর্মের ‘সৃষ্টিতত্ত্বের’ আদলে সপ্তম
- হিজরী শতকের ছূফী মহিউদ্দীন ইবনুল
- আরাবী (৫৬০-৬৩৮ হিঃ) বলেন,
- ‘আল্লাহ সর্বপ্রথম ‘নূরে মুহাম্মাদী’
- সৃষ্টি করেন এবং তার থেকে সকল
- সৃষ্টি জগতকে পয়দা করেন। জাবির
- (রাঃ)-এর নাম জড়িয়ে- ‘সর্বপ্রথম
- আল্লাহ তোমার নবীর নূরকে তার নূর
- থেকে সৃষ্টি করেন’- এই
- মিথ্যা কথাটি সর্বপ্রথম ইবনুল
- আরাবী তার রচিত বই-
- পুস্তকে ‘হাদীছ’ নাম দিয়ে উল্লেখ
- করেন।[21]
- আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাই যে,
- হিন্দু ধর্মের ‘অদ্বৈতবাদ’, খৃষ্টান
- ধর্মের ‘বহু ঈশ্বরবাদ’ এবং ইবনুল
- আরাবী উদ্ভাবিত মুসলমানদের
- ‘নূরে মুহাম্মাদী তত্ত্ব’-এর
- মধ্যে কোনই প্রভেদ নেই।
- বরং চমৎকার মিল রয়েছে। তিন
- ধর্মের তিনটি মতবাদের মৌলিক
- কথা একটিই। আর তা হচ্ছে জগতের
- সকল সৃষ্টিই হিন্দুর ‘ঈশ্বর’, খৃষ্টানের
- ‘খোদা’ এবং মুসলমানের ‘আল্লাহর’
- সত্তা থেকে সৃজিত হয়েছে।
- ‘আল্লাহর নূরে নবী পয়দা, নবীর
- নূরে জগত পয়দা’ যার সংক্ষিপ্ত রূপ
- ‘নূরনবী’, এই বচন যারা হাদীছ
- নামে প্রচার করেন এবং এ
- আক্বীদা পোষণ করেন তাদের কথার
- অর্থ দাঁড়ায় যে, ‘আল্লাহর সত্তা’
- বা ‘যাত’ একটি ‘নূর’ বা নূরানী বস্ত্ত
- এবং আল্লাহ স্বয়ং নিজের সেই
- যাতের বা ‘সত্তার’ অংশ থেকে তাঁর
- নবীকে পয়দা করেছেন
- (নাঊযুবিল্লাহ) । অথচ আল্লাহ
- তা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।
- গুরুত্বের সাথে বিবেচনার
- দাবী রাখে যে, কোন হাদীছ
- গ্রন্থেই ছহীহ, যঈফ, হাসান কোন
- সূত্রেই রাসূল (ছাঃ)
- থেকে তিনি ‘নূর নবী’ বা ‘নূর
- দ্বারা তৈরী’ এমন একটি হাদীছও
- বর্ণিত হয়নি। হিজরী সাতশত
- শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত ছাহাবী,
- তাবেঈ, তাবে তাবেঈ,
- সালাফে ছালেহীন, চার ইমাম সহ
- কোন মুসলিম আলেম ‘নূরনবী’
- সংক্রান্ত কিছুই জানতেন না।
- যদি তাঁরা জানতেন তাহ’লে অবশ্যই
- ইতিহাস ও সীরাত
- গ্রন্থে তা লিপিবদ্ধ করে যেতেন।
- কিন্তু তা নেই। এমনকি ইসলামের
- ইতিহাসের প্রথম পাঁচশত বছরে কোন
- দল-উপদল বা বাতিল ফের্কার পক্ষ
- হ’তেও ‘নূর নবী’ বিষয়ক কিছু
- আলোচিত হয়নি।
- কিন্তু বিচিত্র এই দেশ। বিচিত্র এ
- দেশের মানুষ। কবির ভাষায়- এমন
- দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাক
- তুমি…। সব সম্ভবের এই
- দেশে কে শোনে কার কথা।
- প্রমাণবিহীন বাংলা বই-পুস্তক আর
- ওয়ায-মাহফিলে বক্তাদের
- মুখে শোনা কথার উপর নির্ভরশীল
- হয়ে কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী,
- গীতিকার সকলেই বিভ্রান্ত
- আক্বীদায় বিশ্বাস স্থাপন
- করে বা না করে অভ্যাসগত শিরকের
- পঙ্কিলে আটকে গেছে। যার শেষ
- পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। কারণ আল্লাহ
- শিরকের ফলাফল
- সম্পর্কে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ
- করে বলেছেন, ‘যদি তারা শিরক
- করে তাহ’লে তাদের আমল সমূহ নষ্ট
- হয়ে যাবে’ (আন‘আম ৬/৮৮) ।
- সঠিক আক্বীদা :
- ইহুদীরা ওযায়ের (আঃ),
- খৃষ্টানরা ঈসা (আঃ) ও আরবের
- মুশরিকরা হযরত ইবরাহীম ও ইসমাঈল
- (আঃ) সম্পর্কে অতি ভক্তি ও
- বাড়াবাড়ি করে শিরকে নিপতিত
- হয়েছিল। এজন্য পবিত্র কুরআন ও
- হাদীছে আবদিয়াত (বান্দা),
- বাশারিয়াত (মানবত্ব), গায়েবি খবর
- সম্পর্কে না জানা প্রভৃতি বিষয়ে বারবার
- আলোচনা করা হয়েছে।
- যাতে ঈমানদারগণ রাসূলের আনুগত্য ও
- ভালবাসার পাশাপাশি তাঁর
- প্রতি অতি ভক্তি থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারে।
- মহান আল্লাহ তাঁর প্রেরিত রাসূলের
- পরিচিতি বর্ণনা করে বলেন, ‘বল,
- আমি তোমাদের মতই মানুষ; আমার
- প্রতি অহী হয় যে, তোমাদের ইলাহ
- একমাত্র ইলাহ’ (হামীম সাজদা ৪১/৬) ।
- রাসূল (ছাঃ) নিজেই নিজের
- বৈশিষ্ট্য পেশ করে বলেছেন,
- ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মতই একজন
- মানুষ। আমি ভুলে যাই,
- যেমনভাবে তোমরা ভুলে যাও।
- সুতরাং আমি ভুলে গেলে তোমরা আমাকে স্মরণ
- করিয়ে দিবে’।[22] সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য
- সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায়
- রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘সকল
- ফেরেশতা নূর থেকে এবং জ্বিন
- জাতিকে আগুন
- থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর
- আদমকে (মানব জাতি)
- সৃষ্টি করা হয়েছে সেই সব ছিফাত
- দ্বারা, যে ছিফাতে তোমাদের
- ভূষিত করা হয়েছে (অর্থাৎ মানব
- জাতিকে মাটি ও
- পানি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে)।[23]
- এ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে,
- কেবলমাত্র ফেরেশতাগণ ‘নূর’-এর
- তৈরী। মানব জাতি কিংবা তার মধ্য
- হ’তে নবী-রাসূলগণ নূরের তৈরী নয়।
- আলেমগণের উচিত, পবিত্র কুরআনের
- আয়াত ও ছহীহ হাদীছগুলির উপর
- নির্ভর করা এবং সেই মুতাবিক সঠিক
- ও বিশুদ্ধ আক্বীদা গ্রহণ ও প্রচার করা।
- সঠিক আক্বীদা গ্রহণের
- কথা বলা হ’লে যদি আপনি বলেন,
- ‘এগুলি ওহাবীদের কথা। ওহাবীদের
- নিকট
- থেকে আক্বীদা শিখতে হবে না।
- এদেশে ইসলাম প্রচার
- করেছে ওলী-আউলিয়াগণ। এতদিন
- পর ওহাবীরা এসেছে নতুন
- করে আক্বীদা শিখাতে’? এসব
- উক্তি করে আপনি নিজেকে দলীয়
- সংকীর্ণতার কুটিল
- পঙ্কিলে নিমজ্জিত করলেন। পবিত্র
- কুরআনের আয়াত ও রাসূল (ছাঃ)-এর
- হাদীছ ‘ওহাবী’ অথবা ‘সুন্নী’ এ রকম
- বিভাজন করে বর্ণিত হয়নি।
- এক্ষেত্রে আপনি ঈমানদার কি-
- না সেটাই বিবেচ্য বিষয়।
- বিদ‘আতী ও কুফরী আক্বীদা-আমল
- সমর্থন
- করা হ’লে তিনি পাক্কা ‘সুন্নী’। আর
- তার
- বিরোধিতা করলে কা‘বা মসজিদের
- ইমাম ছাহেব হ’লেও তিনি ওহাবী।
- কি চমৎকার অভিধা! এসব
- গোঁড়ামি ছেড়ে পরকালীন
- নাজাতের লক্ষ্যে সকলকে কুরআন ও
- হাদীছে বর্ণিত ছহীহ আক্বীদা গ্রহণ
- করতে হবে। ভ্রান্ত আক্বীদা ও
- শয়তানী পথ ছাড়তে হবে।
- এছাড়া কোন গত্যন্তর নেই।
- উপসংহার :
- বাংলা ভাষায় রচিত কাব্য ও
- কবিতায়, গযল ও গানে আল্লাহ ও
- রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে ভ্রান্ত
- আক্বীদা আবহমান কাল
- থেকে প্রচার হয়ে আসছে। প্রচলিত
- শত শত গযল ও ইসলামী সঙ্গীতের মধ্য
- থেকে কয়েকটি মাত্র দৃষ্টান্ত স্বরূপ
- উল্লেখ করা হয়েছে। সকল দলীয়
- সংকীর্ণতার
- ঊর্ধ্বে থেকে পরকালীন
- মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে অতীতের ভুল
- সংশোধন করে নেওয়া মুমিনের
- দায়িত্ব ও কর্তব্য।
- আসুন! সে লক্ষ্য
- সামনে রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের
- প্রতি আমাদের দায়-দায়িত্ব পালন
- করি। নির্ভুল আক্বীদা প্রতিষ্ঠায়
- পারস্পরিক সহযোগিতা দান করি।
- আল্লাহ তাওফীক দান করুন- আমীন!
- সহকারী অধ্যাপক, ফজিলা রহমান
- মহিলা কলেজ, কৌরিখাড়া,
- পিরোজপুর।
- [1] . মুহাম্মদ শাহাব উদ্দীন, সাহিত্য
- সাধনায় কয়েকজন মুসলিম
- প্রতিভা (ঢাকা : ইসলামিক
- ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ডিসেম্বর
- ২০০৪), পৃঃ ১৭।
- [2] . ঐ, পৃঃ ১৮।
- [3] . তদেব।
- [4] . ঐ, পৃঃ ৩৪।
- [5] . ঐ, পৃঃ ৩৫।
- [6] . ঐ, পৃঃ ২০।
- [7] . বাংলা সহজপাঠ, পঞ্চম শ্রেণী,
- বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড,
- ঢাকা, পুনর্মুদ্রণ: নভেম্বর, ২০১২,
- পৃঃ ৯৬-৯৭; ইসলাম ও নৈতিক
- শিক্ষা ৪র্থ শ্রেণী, জাতীয়
- শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক
- বোর্ড,ঢাকা।
- [8] . ডাঃ এম.এ. সামাদ, আমার প্রিয়
- ইসলামী গান, পৃঃ ৭৮, প্রথম প্রকাশ :
- মার্চ ২০০৫। প্রকাশক : সাহিত্য
- সোপান, বগুড়া।
- [9] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১৪।
- [10] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১০।
- [11] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৭১।
- [12] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৭।
- [13] . শাহী গযল বা হিযবুল্লাহ
- জাগরণী, পৃঃ ১৭;
- ছারছীনা দারুচ্ছুন্নাত লাইব্রেরী,
- নেছারাবাদ, পিরোজপুর।
- [14] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৭।
- [15] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৯।
- [16] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৪৭।
- [17] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৭।
- [18] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৬২।
- [19] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৭০।
- [20] . মোঃ আবু তাহের বর্ধমানী,
- অধঃপতনের অতল তলে, পৃঃ ৬৪।
- [21] . ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ
- জাহাঙ্গীর, হাদীসের
- নামে জালিয়াতি, পৃঃ ২৫৯ তৃতীয়
- প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ২০০৮।
- [22] . ছহীহ বুখারী হা/৪০১।
- [23] . মুসলিম; মিশকাত হা/৫৭০১।
ইসলামী গান ও কবিতায় ভ্রান্ত আকিদা
প্রকাশিত হয়েছেঃ 12:32
|
টিউন বিভাগঃ
|

ConversionConversion EmoticonEmoticon