ইসলামী গান ও কবিতায় ভ্রান্ত আকিদা

টিউন করেছেনঃ | প্রকাশিত হয়েছেঃ 12:32 | টিউন বিভাগঃ

  • ইসলামী গান ও
  • কবিতায় ভ্রান্ত
  • আক্বীদা
  • -মুহাম্মাদ আব্দুল হামীদ
  • সূচনা :
  • কুরআন মাজীদের আয়াত ও
  • হাদীছে নববী দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত
  • হয় যে, মানুষের ইবাদত ও সৎ আমল কবুল
  • হওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে ঈমান-
  • আক্বীদা বিশুদ্ধ হওয়া। আর
  • তা হচ্ছে শিরক মুক্ত নির্ভেজাল
  • তাওহীদ ভিত্তিক আক্বীদা হওয়া।
  • নানা কারণে অনেক আগে থেকেই
  • বাংলাদেশের মুসলিম
  • সমাজে আক্বীদা ও
  • আমলে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
  • ফলে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ
  • ধর্মভীরু হওয়া সত্তেবও
  • আক্বীদা নির্ভুল না হওয়ার
  • কারণে পরকালীন
  • জীবনে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের
  • অন্তর্ভুক্ত হয়ে চলেছেন। তাই আমল
  • করার পূর্বে সঠিক আক্বীদা পোষণ
  • করা ও
  • তা ব্যাপকভাবে চর্চা করা প্রতিটি মুসলিমের
  • দায়িত্ব ও কর্তব্য।
  • দেশে প্রচলিত কতিপয় ভ্রান্ত
  • আক্বীদা :
  • বাংলাদেশের মুসলিম
  • সমাজে প্রচলিত ভ্রান্ত
  • আক্বীদা সমূহের প্রধান বিষয়
  • হচ্ছে আল্লাহর সত্তা এবং তাঁর নাম ও
  • গুণাবলী সম্পর্কে ভুল বিশ্বাস।
  • দ্বিতীয় বিষয়টি হ’ল মহানবী শেষ
  • নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পর্কে ভুল
  • ধারণা ও বিশ্বাস। যুগ যুগ ধরে প্রচলিত
  • ভুল ধারণা ও বিশ্বাসের মূল
  • কারণগুলি নিম্নরূপ :
  • ১. দেশের ধর্মীয় ও সাধারণ
  • শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠ্যক্রমে কুরআন ও
  • ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক সঠিক আকাইদ
  • শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকা।
  • ২. তাক্বলীদে শাখছী বা অন্ধ
  • ব্যক্তিপূজা। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ
  • হাদীছে বর্ণিত সঠিক আক্বীদা গ্রহণ
  • না করে মাযহাবের দোহাই
  • দিয়ে তার অপব্যাখ্যা করা।
  • ৩. আলেম ও বক্তাদের
  • মুখে শোনা কথা বাছ-বিচার
  • না করে গ্রহণ করা ও তা প্রচার করা।
  • ৪. দলীল-প্রমাণ ছাড়া আলেমগণ
  • ধর্মীয় বই-পুস্তকে জাল-যঈফ বর্ণনা ও
  • ভিত্তিহীন বানোয়াট
  • কথা লিখে থাকেন। সাধারণ শিক্ষায়
  • শিক্ষিত কবি-সাহিত্যিকগণ আলেম
  • লেখকদের পদাংক অনুসরণ করে নিজ
  • রচিত কবিতা, ইসলামী গান ও গযল,
  • প্রবন্ধ
  • এবং সিরাতুন্নবী গ্রন্থে সেসব
  • ভ্রান্ত আক্বীদা প্রচার করেন।
  • প্রসঙ্গ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য :
  • বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের
  • ক্রমবিকাশের ইতিহাসে কাব্য
  • সাহিত্যে ইসলামী ভাবধারা ও
  • ঐতিহ্য সৃষ্টিতে মুসলিম কবি-
  • সাহিত্যিকগণের অসামান্য অবদান
  • রয়েছে। বলতে গেলে মুসলিম
  • বাংলা সাহিত্যের যাত্রা শুরু হয়
  • আমাদের প্রিয় নবী ও রাসূল হযরত
  • মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর প্রশংসামূলক
  • নানা কথা নিয়ে। বিশেষ করে পুঁথি-
  • সাহিত্যের মাধ্যমে না‘ত বা রাসূল
  • প্রশস্তি ব্যাপক আকারে প্রকাশিত হয়।
  • ষোড়শ শতকের শেষার্ধ
  • থেকে মুসলিম কবিগণ মুহাম্মাদ
  • (ছাঃ)-এর জীবনের বিভিন্ন দিক
  • নিয়ে কাব্য রচনা শুরু করেন। কিন্তু
  • লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, সেই শুরুকাল
  • থেকেই কবিগণ কাব্য রচনার
  • সূচনাতেই রাসূল (ছাঃ)-এর
  • প্রশস্তি গাইতে গিয়ে আবেগ
  • তাড়িত হয়ে অথবা জ্ঞানের
  • সীমাবদ্ধতার কারণে মুহাম্মাদ
  • (ছাঃ)-কে অতিমাত্রায়
  • ভক্তিভরে ‘অতিমানব’ অথবা আল্লাহর
  • ‘সমকক্ষ’ জ্ঞান করেছেন। বিশেষত
  • বাংলা কবিতা ও কাব্য
  • সাহিত্যে ‘নূরনবী’ প্রসঙ্গটি বারবার
  • উল্লেখ করা হয়েছে।
  • যেমন সপ্তদশ শতকের শ্রেষ্ঠ
  • কবি সৈয়দ আলাওল তাঁর ‘পদ্মাবতী’
  • কাব্যের সূচনা করেছেন এভাবে-
  • ‘পূর্বেতে আছিল প্রভু নৈরূপ আকার।
  • ইচ্ছিলেক নিজ সখা করিতে প্রচার।
  • নিজ সখা মহাম্মদ প্রথমে সৃজিলা।
  • সেই যে জাতির মূলে ভূবন নিরমিলা।
  • তাহার পিরিতে প্রভু সৃজিল সংসার।
  • আপনে কহিছে প্রভু কোরান মাঝার।
  • [1]
  • এখানে কবি আল্লাহকে নিরাকার
  • সত্তা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। অথচ
  • সঠিক আক্বীদা হল আল্লাহর আকার
  • আছে। তিনি নিরাকার নন। তবে তাঁর
  • সাথে অন্য কিছুর সাদৃশ্য নেই
  • (শূরা ৪২/১১) ।
  • কবি মুহাম্মাদ খান ‘মকতুল হুসেইন’
  • কাব্যের শুরুতে মহানবী (ছাঃ)-এর
  • প্রশস্তি এভাবে বর্ণনা করেছেন :
  • মুহাম্মাদ নবী নাম হৃদয়ে গাঁথিয়া
  • পাপীগণ পরিণামে যাইবে তরিয়া।
  • দয়ার অাঁধার নবী কৃপার সাগর
  • বাখান করিতে তার সাধ্য আছে কার।
  • যার প্রেমে মুগ্ধ
  • হইয়া আপে নিরঞ্জন
  • সৃষ্টি স্থিতি করিলেক এ চৌদ্দ ভূবন।
  • [2]
  • অষ্টাদশ শতকের কবি সৈয়দ
  • হামজা পুঁথিকাব্যে রাসূল
  • প্রশস্তি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
  • মোহাম্মদ নামে নবী সৃজন করিয়া
  • আপনার নূরে
  • তাঁকে রাখিলা ছাপাইয়া।[3]
  • আধুনিক বাংলা কাব্য
  • সাহিত্যে ‘নূরনবী’ প্রসঙ্গ :
  • মুসলিম জাগরণ ও
  • ইসলামী চেতনা সৃষ্টির
  • দিশারী রূপে আধুনিক বাংলা কাব্য-
  • সাহিত্যে কবি গোলাম
  • মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪), জাতীয়
  • কবি কাযী নজরুল ইসলাম
  • এবং কবি ফররুখ আহমদ (১৯১৮-১৯৭৪)
  • স্মরণীয় হয়ে আছেন। ইসলাম ও মুসলিম
  • ঐতিহ্যের বিচিত্র রূপ
  • তাঁরা ইসলামী গান ও কবিতার মধ্য
  • দিয়ে সুনিপুণভাবে দক্ষ শিল্পীর মত
  • চিত্রিত করেছেন। তাঁদের অবদান
  • অনস্বীকার্য। তা সত্তেবও প্রচলিত
  • ভুল কথার অন্ধানুসরণ করে তাঁরাও ভুল
  • আক্বীদা কাব্যাকারে লিখে গেছেন।
  • এখানে কয়েকজন প্রথিতযশা কবির
  • লিখিত কবিতার কিছু চরণ উল্লেখ
  • করছি।
  • কবি গোলাম মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪) :
  • কবি গোলাম মোস্তফা মুসলিম
  • নবজাগরণের কবি। তাঁর সাহিত্যকর্ম ও
  • চিন্তাধারায় ইসলামী তাহযীব ও
  • তামাদ্দুন এবং মুসলিম ঐতিহ্যের
  • প্রকাশ ঘটেছে। মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর
  • প্রতি গভীর অনুরাগ ও
  • ভালবাসা থেকেই তিনি ‘বিশ্বনবী’
  • রচনায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন
  • বলে মনে হয়। কিন্তু
  • দুঃখজনকভাবে ‘বিশ্বনবী’
  • গ্রন্থে তিনি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-
  • কে ‘নূরের তৈরী নবী’
  • রূপে আখ্যায়িত
  • করে মিথ্যা কথা প্রচারে ভূমিকা রেখেছেন
  • এবং বিশ্বনবীর সুমহান
  • মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করেছেন।
  • তাছাড়া তার রচিত না‘তে রাসূল-
  • নিখিলের চির সুন্দর সৃষ্টি
  • আমার মুহাম্মাদ রাসূল,
  • আমার ….।
  • নূরের রবি যে আমার নবী
  • পূর্ণ করুণা ও প্রেমের ছবি
  • আমার …।[4]
  • তারপর আরো অগ্রসর হয়ে কবি গীত
  • রচনা করলেন এভাবে-
  • তুমি যে নূরের রবি
  • নিখিলের ধ্যানের ছবি
  • তুমি না এলে দুনিয়ায়
  • অাঁধারে ডুবিত সবি।
  • ইয়া নবী সালাম আলাইকা
  • ইয়া হাবীব সালাম আলাইকা
  • সালাওয়া তুল্লা আলাইকা।
  • চাঁদ সুরুয আকাশে আসে
  • সে আলোয় হৃদয় না হাসে
  • এলে তাই হে নব রবি
  • মানবের মনের আকাশে
  • ইয়া নবী সালাম আলাইকা
  • …..।
  • রাসূলকে ‘নূরনবী’ আখ্যায়িত
  • করে ভ্রান্ত আক্বীদাপূর্ণ উপরোক্ত
  • গীত কবিতাটি গীতিকার
  • কবি গোলাম মোস্তফা ও বিখ্যাত
  • কণ্ঠশিল্পী আববাস উদ্দীন আহমদ-এর
  • দ্বৈত কণ্ঠে কলিকাতায় তৎকালীন
  • গ্রামোফোন কোম্পানীতে রেকর্ড
  • হয়।[5] তৎপর তা ‘বাংলা মীলাদ’ নাম
  • ধারণ করে বাংলা মুলুকে ‘মৌলুদ’
  • অনুষ্ঠানে ‘কিয়াম’
  • কালে বাংলা ‘দরূদ ও সালাম’
  • রূপে পাঠ করার কিংবদন্তীর
  • মর্যাদা (?) অর্জন করেছে। আজও
  • বাংলা অঞ্চলের সর্বত্র
  • সমানভাবে নবীর উপর সালাম
  • পৌঁছানোর নামে বাংলা কবিতার
  • সুর মূর্ছনা মীলাদ প্রেমিকদের
  • হৃদয়তন্ত্রীতে ঝংকার তোলে।
  • ভাবতে অবাক লাগে, একজন
  • বাঙালী কবি রচিত গীত কবিতা দরূদ
  • ও সালাম রূপে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের
  • অংশ ও উপকরণে পরিণত
  • হ’তে পারে কিভাবে? এ দেশের
  • আলেমগণ কিভাবে দ্বীন ইসলামের
  • এই বিকৃতি চোখ
  • বুঁজে মেনে নিয়েছেন, সেটাই
  • প্রশ্ন।
  • কাযী নজরুল ইসলাম(মৃঃ বাংলা ১৩০৬/১৯৭৮ইং) :
  • জাতীয় কবি কাযী নজরুল ইসলাম
  • আমাদের গর্ব। তাঁর কবিতা,
  • ইসলামী গান ও গযল
  • এবং না‘তে রাসূল পাঠে আমরা মুগ্ধ
  • ও বিমোহিত হই। নবজাগরণে অনুপ্রাণিত হই।
  • আমরা নির্দ্বিধায়
  • বলতে পারি বাংলা কাব্য
  • সাহিত্যের বিশাল আঙিনায় তাঁর
  • রচিত ইসলামী কবিতা ও
  • না‘তে রাসূল নিজস্ব মহিমায় ভাস্বর
  • হয়ে আছে। তা সত্তেবও কবির
  • অনেক না‘তে রাসূল ও ইসলামী গান
  • ভুল আক্বীদায় কলুষিত হয়েছে।
  • নিম্নে কয়েকটি না‘তে রাসূলের
  • দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হ’ল-
  • ১. মুহাম্মাদ নাম যতই জপি ততই মধুর
  • লাগে
  • ঐ নামে এত মধু থাকে কে জানিত
  • আগে
  • মুহাম্মাদ নাম যতই জপি…..।
  • ২. আমার মুহাম্মাদ নামের ধেয়ান
  • হৃদয়ে যার রয়।
  • ৩. নাম মুহাম্মাদ বোলরে মন, নাম
  • আহমদ বোল।
  • ৪. মুহাম্মাদ নাম জপেছিলি বুলবুলি তুই
  • আগে
  • তাই কিরে তোর কণ্ঠেরি গান এতই
  • মধুর লাগে।
  • ৫. মুহাম্মাদ মোর নয়নমণি মুহাম্মাদ
  • নাম জপমালা
  • মুহাম্মাদ নাম শিরে ধরি, মুহাম্মাদ
  • নাম গলে পরি।[6]
  • ফররুখ আহমাদ (১৯১৮-১৯৭৪) :
  • বাংলা সাহিত্যের আধুনিক
  • কাব্যধারায় ইসলামের গৌরব
  • মহিমা পুনরুদ্ধার ও মুসলিম
  • পুনর্জাগরণের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার
  • শ্রেষ্ঠ রূপকার ছিলেন কবি ফররুখ
  • আহমদ। তাঁকে বলা হয় ‘মুসলিম
  • রেঁনেসার কবি’। সকল
  • জড়তা পায়ে দলে জেগে উঠার
  • হাতছানি রয়েছে তাঁর কাব্য ও
  • কবিতায়। এতদসত্তেবও সমাজের
  • চলমান ধ্যান-
  • ধারণা দ্বারা কবি কিছুটা বিচ্যুৎ-
  • বিভ্রান্ত হয়েছেন। যেমন
  • একটি না‘তে রাসূল
  • লিখতে গিয়ে কথিত ‘নূরনবী’
  • নামে ভ্রান্ত আক্বীদা তিনিও
  • প্রকাশ করেছেন এভাবে-
  • ওগো নূরনবী হযরত
  • আমরা তোমারি উম্মত।
  • তুমি দয়াল নবী,
  • তুমি নূরের রবি,
  • তুমি বাসলে ভাল জগত জনে
  • দেখিয়ে দিলে পথ।
  • আমরা তোমার পথে চলি
  • আমরা তোমার কথা বলি
  • তোমার আলোয় পাই যে খুঁজে
  • ঈমান, ইজ্জত।
  • সারা জাহানবাসী
  • আমরা তোমায় ভালবাসি,
  • তোমায় ভালবেসে মনে
  • পাই মোরা হিম্মত।[7]
  • বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম
  • দেশে সরকারীভাবে শিক্ষার
  • প্রাথমিক স্তরে শিশু-কিশোরদের
  • জন্য পাঠ্যপুস্তকে মহানবী (ছাঃ)
  • সম্পর্কে মারাত্মক এক
  • মিথ্যা আক্বীদা পরিবেশন করা খুবই
  • পরিতাপের বিষয়। মানব
  • জীবনে প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব
  • অপরিসীম ও সুদূরপ্রসারী। আজকের
  • শিশু-কিশোরগণ
  • আগামী দিনে মুসলিম সমাজের
  • কান্ডারী। শিশু-কিশোরদের মন
  • কাদামাটির মত কোমল। এ সময়
  • তাদেরকে যেমন খুশি তেমন
  • করে গড়ে তোলা যায়। এ সময়ের
  • শিক্ষা পাথরে খোদিত নকশার ন্যায়।
  • তাই শিক্ষার প্রাথমিক
  • স্তরে কোমলমতি কিশোর মনের
  • গহীন কোণে আমাদের প্রিয় রাসূল
  • মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পর্কে ভ্রান্ত
  • আক্বীদা-বিশ্বাস শিখিয়ে ‘বিষ
  • বৃক্ষের’ উপর তাদের অনাগত ভবিষ্যত
  • জীবনের ভিত রচনা করা হচ্ছে।
  • সরকার ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কমিটির
  • সম্মানিত সদস্যগণের প্রতি আবেদন,
  • ভবিষ্যতে কোন কবিতা ও প্রবন্ধ
  • পাঠ্যপুস্তকের জন্য নির্বাচন করার
  • প্রাক্কালে ভুল-শুদ্ধ যাচাই-বাছাই
  • করবেন।
  • বিল্লালের গযল, চরমোনাইয়ের গযল,
  • আমার প্রিয় ইসলামী গান, শাহী গযল
  • প্রভৃতি নামকরণে বাজারে প্রচুর
  • ইসলামী গযলের বই-পুস্তক
  • পাওয়া যায়। এ সকল বই-পুস্তকে হাম্দ ও
  • না‘তের নামে আল্লাহ ও রাসূল
  • (ছাঃ) সম্পর্কে নানা প্রকার ভ্রান্ত ও
  • শিরক মিশানো আক্বীদা বিস্তার
  • লাভ করছে। স্কুল ও মাদরাসার
  • কচিকাঁচা বালক-বালিকারা সেইসব
  • বই থেকে গযল মুখস্থ
  • করে মীলাদুন্নবী-
  • সীরাতুন্নবী অনুষ্ঠানে, ওয়ায-
  • মাহফিলে গাইতে থাকে।
  • ওয়ায়েযীন ও বক্তাগণ
  • ইসলামী জালসায় সুর করে গযল
  • গেয়ে থাকেন। বিশেষ বিশেষ
  • দিবসে রেডিও
  • এবং টেলিভিশনে ধর্মীয়
  • অনুষ্ঠানের নাম দিয়ে নামজাদা কণ্ঠ
  • শিল্পীগণ ইসলামী সঙ্গীত
  • পরিবেশন করেন। পথে-প্রাপ্তরে,
  • ফসলের মাঠে কৃষক-শ্রমিক কাজ
  • করতে করতে ইসলামী গান গায়।
  • নদীর বুকে নৌকার মাঝিরা এসব
  • গান গায়। কবি-সাহিত্যিকরা কেউ
  • বুঝে কেউ
  • না বুঝে সেগুলো লিখেছেন। মানুষ
  • তা কণ্ঠে তুলে নিয়ে দিবা-
  • রাত্রি গাইছে। কেউ বুঝে, কেউ
  • না বুঝে। সকলেই
  • নিজেকে তাওহীদী আক্বীদায়
  • বিশ্বাসী খাঁটি মুসলিম
  • বলে ধারণা করে। যদিও তার
  • কণ্ঠে গাওয়া সঙ্গীতটি তাকে ইসলাম
  • থেকে দূরে নিয়ে যায়।
  • আল্লাহ তা‘আলা এবং রাসূল (ছাঃ)
  • সম্পর্কিত ভ্রান্ত আক্বীদার
  • বিষমিশ্রিত
  • কয়েকটি ইসলামী সঙ্গীতের দৃষ্টান্ত
  • নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল-
  • ১. নবী মোর পরশমণি, নবী মোর
  • সোনার খনি
  • নবী নাম জপে যে জন সেই
  • তো দোজাহানের ধনী।
  • নবী মোর নূরে খোদা তার তরে সকল
  • পয়দা
  • আদমের কলবেতে তারই নূরের
  • রওশনী…
  • নবী মোর পরশমণি, নবী মোর
  • সোনার খনি।[8]
  • প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আব্দুল আলীমের
  • কণ্ঠে এই সঙ্গীতটি সরকারী প্রচার
  • মাধ্যমে সর্বদাই প্রচারিত হয়।
  • গণমানুষের নিকট সঙ্গীতখানি খুবই
  • জনপ্রিয়। কিন্তু এর ভিতর এমন সব বিষয়
  • রয়েছে, যার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন
  • করলে শিরকে আকবর (বড় শিরক) হয়
  • এবং মানুষকে ইসলাম থেকে খারিজ
  • করে দেয়।
  • ২. সব মানুষের সেরা মানুষ
  • নবীজি আমার
  • নূরের বাতি দাও জ্বেলে দাও
  • নয়নে আমার।
  • তোমার দয়ার কাঙাল আমি
  • কাঁদি সারা দিবস যামী।
  • দূর কর দূর কর মনে মিটাও অাঁধিয়ার।[9]
  • ৩. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদ
  • রাসুল
  • ……
  • নূরের নবী প্রেমের
  • ছবি নাইকো তাহার তুল,
  • ও ভাই নাইকো তাহার তুল
  • লা ইলাহা…..।[10]
  • ৪. দূর আরবে ফুটেছিল একটি নূরের ফুল
  • (২ বার)
  • সে ফুল আমার
  • কমলীওয়ালা রাসূলে মাকবুল
  • ……
  • নূর নবীজীর দরূদ
  • তাকে করে যে আকুল…
  • রাসূলে মাকবুল, আমার
  • রাসূলে মাকবুল।[11]
  • ৫. দিবা নিশি জপি আমি আল্লাহ
  • নবীর নাম
  • ঐ নামের গুণে পুরবে জানি (২ বার)
  • আমার মনস্কাম
  • আল্লাহ নবীর নাম
  • ……
  • ঐ নামে যে পরবে মালা, জীবন
  • হবে তার উজালা
  • …. আল্লা নবীর নাম।[12]
  • ৬. ডেকে লও রাসূলুল্লাহ,
  • রওজা পাকের কিনারে
  • আমি সহিতে পারি না বিরহ জ্বালা,
  • ধন্য কর দীদারে
  • আমি কেঁদে কেঁদে হইগো সারা,
  • ধন্য কর দীদারে।
  • আজো রওজায় শুয়ে থেকে হায়,
  • কাঁদেন তিনি উম্মাতের মায়ায়।[13]
  • ৭. নূরুন আলা নূর মুহাম্মাদ নূরের
  • খাজিনা
  • তোমার নূরের বদন
  • দেখতে আমি দেওয়ানা।
  • তোমার নূরে জগৎ জাহান
  • সৃজিয়াছেন আল্লাহ মহান
  • ……..
  • তোমার নূরের
  • লোভে লোভী তামাম দুনিয়া।
  • তোমার
  • নূরে পয়দা হয়ে ফেরেশতাদের
  • সিজদা লয়ে
  • পাইল তাজীম আদম নবী তারই
  • উছিলায়
  • তোমার নূরের তাজাল্লীর ঐ
  • ইশকে দেওয়ানা।[14]
  • -মাওলানা আ.জ.ম. অহিদুল আলম।
  • ৮. মরণকালে দিও
  • গো দেখা হে প্রিয় রাসূল আমায়
  • হৃদয় মাঝে তোমারি নাম
  • জপি সারাক্ষণ।[15]
  • ৯. নবী রাসূলকে মুর্দা বলে কোন
  • সে অবুঝ দল
  • ……
  • নবী রাসূলগণ কবর
  • শরীফে জিন্দা আছেন হায়
  • মূসা নবীকে একদা রাসূল নামাজ
  • হালে পায়।
  • মোদের নবী হায়াতুন্নবী আছেন
  • জিন্দা হালে
  • মোদের লাগি দোয়ায় রত আছেন
  • সাঁঝ সকালে।
  • উম্মতেরা করছে কি কাজ
  • নবী দেখতে পায়
  • সেই নবীকে মুর্দা বলা কাদের
  • শোভা পায়।
  • ……
  • মাযহাব মানা ফরজ বলে সঠিক
  • আলেমেরা
  • মাযহাব
  • যারা ছাড়িবে তারা হবে যে গোমরা
  • কোন বাতিল দল মাযহাব
  • মানে না মোদের জামানায়
  • সত্য আলোর
  • রশ্নি ছেড়ে অাঁধারে কাতরায়।[16]
  • …. মাঃ হায়দার হুসাইন
  • ১০. ও গো নবী সরোয়ার তুমি হাবীব
  • আল্লার
  • …….
  • সৃষ্টি করে নূরকে তোমার
  • অতি তাজীমে
  • সবার আগে রাখেন
  • খোদা আরশে আজীমে
  • সে পাক নূরেতে তোমার
  • গড়েন তামাম সংসার
  • সৃষ্টি হল আরশ, কুরসি, জমিন ও আসমান।
  • …..
  • পেলে দিদার প্রভুর
  • নূরে মিলে গেল নূর।[17]
  • -মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান।
  • ১১. সব নবীদের
  • সেরা তুমি আখেরী রাসূল,
  • ……..
  • পয়দা হল নিখিল জাহান
  • তোমারি পাক নূরে
  • ধরা হতে অাঁধার
  • কালো পালিয়ে গেল দূরে।[18]
  • – মাওলানা আ.জ.ম. ওবায়দুল্লাহ
  • ১২. নূর মুহাম্মাদ ছল্লাল্লাহু সব নবীর
  • সুলতান
  • তুমি লাহুতের মেহমান,
  • ………….
  • চাঁদ-সুরুজে তোমার দ্যুতি
  • গ্রহ তারায় তোমার জ্যোতি
  • আরশ ফালাক সকল তোমার
  • নূরেতে রৌশন।[19]
  • -মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান।
  • জনৈক কবি লিখেছেন,
  • আকার কি নিরাকার সেই রববানা
  • আহমদ আহাদ বিচার হলে যায় জানা
  • আহমদ নামেতে দেখি
  • মিম হরফে লেখেন নবী
  • মিম গেলে আহাদ বাকী
  • আহমদ নাম থাকে না।
  • আরেকজন কবি লিখেছেন,
  • আহমদের ঐ ‘মিম’-এর পর্দা
  • উঠিয়ে দেখরে মন
  • দেখবি সেথা বিরাজ করে
  • আহাদ নিরঞ্জন।[20]
  • একজন মুসলিম গীতিকারের রচিত
  • কথিত ভক্তিমূলক গান দেশের
  • বিখ্যাত
  • কণ্ঠশিল্পীরা সরকারী প্রচার
  • মাধ্যমে সর্বদাই গেয়ে থাকেন। যার
  • কথাগুলি খুবই আপত্তিজনক।
  • কথাগুলি হ’ল-
  • ছায়া বাজি পুতুল রূপে বানাইয়া মানুষ
  • যেমনি নাচাও তেমনি নাচি পুতুলের
  • কি দোষ
  • তুমি হাকিম হইয়া হুকুম কর,
  • পুলিশ হইয়া ধর
  • সর্প হইয়া দংশন কর
  • ওঝা হইয়া ঝাড়।
  • তুমি মার তুমি বাঁচাও
  • তুমি খাওয়াইলে আমি খাই, আল্লাহ…
  • এই যে দুনিয়া কিসের লাগিয়া
  • এত যত্নে গড়াইলেন সাঁই
  • এই যে দুনিয়া……।
  • হিন্দু ধর্মাবলম্বী পন্ডিত শ্রীমৎ
  • শংকরাচার্য্য অদ্বৈতবাদ মতবাদ
  • প্রচার করেছেন। যার সারকথা হ’ল
  • সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টি অভিন্ন বস্ত্ত।
  • জগতে যা কিছু বিদ্যমান তার সবকিছুই
  • স্রষ্টার অংশ বিশেষ। যার আরেক নাম
  • সর্বেশ্বরবাদ। যার অর্থ সব জড় ও জীব
  • জগতের মধ্যেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব
  • আছে। এই বিশ্বাস থেকেই
  • হিন্দুরা সকল সৃষ্ট বস্ত্তর পূজা করার মধ্য
  • দিয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করার
  • দাবী করে।
  • খৃষ্টানরা দাবী করে যে, ঈশ্বর
  • সর্বপ্রথম তার নিজের ‘যাত’
  • বা সত্তা থেকে ‘কালেমা’ বা পুত্র
  • যীশু খৃষ্টকে সৃষ্টি করেন এবং তার
  • থেকে সকল
  • সৃষ্টিকে তিনি সৃষ্টি করেন। খৃষ্ট
  • ধর্মের ‘সৃষ্টিতত্ত্বের’ আদলে সপ্তম
  • হিজরী শতকের ছূফী মহিউদ্দীন ইবনুল
  • আরাবী (৫৬০-৬৩৮ হিঃ) বলেন,
  • ‘আল্লাহ সর্বপ্রথম ‘নূরে মুহাম্মাদী’
  • সৃষ্টি করেন এবং তার থেকে সকল
  • সৃষ্টি জগতকে পয়দা করেন। জাবির
  • (রাঃ)-এর নাম জড়িয়ে- ‘সর্বপ্রথম
  • আল্লাহ তোমার নবীর নূরকে তার নূর
  • থেকে সৃষ্টি করেন’- এই
  • মিথ্যা কথাটি সর্বপ্রথম ইবনুল
  • আরাবী তার রচিত বই-
  • পুস্তকে ‘হাদীছ’ নাম দিয়ে উল্লেখ
  • করেন।[21]
  • আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাই যে,
  • হিন্দু ধর্মের ‘অদ্বৈতবাদ’, খৃষ্টান
  • ধর্মের ‘বহু ঈশ্বরবাদ’ এবং ইবনুল
  • আরাবী উদ্ভাবিত মুসলমানদের
  • ‘নূরে মুহাম্মাদী তত্ত্ব’-এর
  • মধ্যে কোনই প্রভেদ নেই।
  • বরং চমৎকার মিল রয়েছে। তিন
  • ধর্মের তিনটি মতবাদের মৌলিক
  • কথা একটিই। আর তা হচ্ছে জগতের
  • সকল সৃষ্টিই হিন্দুর ‘ঈশ্বর’, খৃষ্টানের
  • ‘খোদা’ এবং মুসলমানের ‘আল্লাহর’
  • সত্তা থেকে সৃজিত হয়েছে।
  • ‘আল্লাহর নূরে নবী পয়দা, নবীর
  • নূরে জগত পয়দা’ যার সংক্ষিপ্ত রূপ
  • ‘নূরনবী’, এই বচন যারা হাদীছ
  • নামে প্রচার করেন এবং এ
  • আক্বীদা পোষণ করেন তাদের কথার
  • অর্থ দাঁড়ায় যে, ‘আল্লাহর সত্তা’
  • বা ‘যাত’ একটি ‘নূর’ বা নূরানী বস্ত্ত
  • এবং আল্লাহ স্বয়ং নিজের সেই
  • যাতের বা ‘সত্তার’ অংশ থেকে তাঁর
  • নবীকে পয়দা করেছেন
  • (নাঊযুবিল্লাহ) । অথচ আল্লাহ
  • তা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।
  • গুরুত্বের সাথে বিবেচনার
  • দাবী রাখে যে, কোন হাদীছ
  • গ্রন্থেই ছহীহ, যঈফ, হাসান কোন
  • সূত্রেই রাসূল (ছাঃ)
  • থেকে তিনি ‘নূর নবী’ বা ‘নূর
  • দ্বারা তৈরী’ এমন একটি হাদীছও
  • বর্ণিত হয়নি। হিজরী সাতশত
  • শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত ছাহাবী,
  • তাবেঈ, তাবে তাবেঈ,
  • সালাফে ছালেহীন, চার ইমাম সহ
  • কোন মুসলিম আলেম ‘নূরনবী’
  • সংক্রান্ত কিছুই জানতেন না।
  • যদি তাঁরা জানতেন তাহ’লে অবশ্যই
  • ইতিহাস ও সীরাত
  • গ্রন্থে তা লিপিবদ্ধ করে যেতেন।
  • কিন্তু তা নেই। এমনকি ইসলামের
  • ইতিহাসের প্রথম পাঁচশত বছরে কোন
  • দল-উপদল বা বাতিল ফের্কার পক্ষ
  • হ’তেও ‘নূর নবী’ বিষয়ক কিছু
  • আলোচিত হয়নি।
  • কিন্তু বিচিত্র এই দেশ। বিচিত্র এ
  • দেশের মানুষ। কবির ভাষায়- এমন
  • দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাক
  • তুমি…। সব সম্ভবের এই
  • দেশে কে শোনে কার কথা।
  • প্রমাণবিহীন বাংলা বই-পুস্তক আর
  • ওয়ায-মাহফিলে বক্তাদের
  • মুখে শোনা কথার উপর নির্ভরশীল
  • হয়ে কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী,
  • গীতিকার সকলেই বিভ্রান্ত
  • আক্বীদায় বিশ্বাস স্থাপন
  • করে বা না করে অভ্যাসগত শিরকের
  • পঙ্কিলে আটকে গেছে। যার শেষ
  • পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। কারণ আল্লাহ
  • শিরকের ফলাফল
  • সম্পর্কে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ
  • করে বলেছেন, ‘যদি তারা শিরক
  • করে তাহ’লে তাদের আমল সমূহ নষ্ট
  • হয়ে যাবে’ (আন‘আম ৬/৮৮) ।
  • সঠিক আক্বীদা :
  • ইহুদীরা ওযায়ের (আঃ),
  • খৃষ্টানরা ঈসা (আঃ) ও আরবের
  • মুশরিকরা হযরত ইবরাহীম ও ইসমাঈল
  • (আঃ) সম্পর্কে অতি ভক্তি ও
  • বাড়াবাড়ি করে শিরকে নিপতিত
  • হয়েছিল। এজন্য পবিত্র কুরআন ও
  • হাদীছে আবদিয়াত (বান্দা),
  • বাশারিয়াত (মানবত্ব), গায়েবি খবর
  • সম্পর্কে না জানা প্রভৃতি বিষয়ে বারবার
  • আলোচনা করা হয়েছে।
  • যাতে ঈমানদারগণ রাসূলের আনুগত্য ও
  • ভালবাসার পাশাপাশি তাঁর
  • প্রতি অতি ভক্তি থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারে।
  • মহান আল্লাহ তাঁর প্রেরিত রাসূলের
  • পরিচিতি বর্ণনা করে বলেন, ‘বল,
  • আমি তোমাদের মতই মানুষ; আমার
  • প্রতি অহী হয় যে, তোমাদের ইলাহ
  • একমাত্র ইলাহ’ (হামীম সাজদা ৪১/৬) ।
  • রাসূল (ছাঃ) নিজেই নিজের
  • বৈশিষ্ট্য পেশ করে বলেছেন,
  • ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মতই একজন
  • মানুষ। আমি ভুলে যাই,
  • যেমনভাবে তোমরা ভুলে যাও।
  • সুতরাং আমি ভুলে গেলে তোমরা আমাকে স্মরণ
  • করিয়ে দিবে’।[22] সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য
  • সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায়
  • রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘সকল
  • ফেরেশতা নূর থেকে এবং জ্বিন
  • জাতিকে আগুন
  • থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর
  • আদমকে (মানব জাতি)
  • সৃষ্টি করা হয়েছে সেই সব ছিফাত
  • দ্বারা, যে ছিফাতে তোমাদের
  • ভূষিত করা হয়েছে (অর্থাৎ মানব
  • জাতিকে মাটি ও
  • পানি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে)।[23]
  • এ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে,
  • কেবলমাত্র ফেরেশতাগণ ‘নূর’-এর
  • তৈরী। মানব জাতি কিংবা তার মধ্য
  • হ’তে নবী-রাসূলগণ নূরের তৈরী নয়।
  • আলেমগণের উচিত, পবিত্র কুরআনের
  • আয়াত ও ছহীহ হাদীছগুলির উপর
  • নির্ভর করা এবং সেই মুতাবিক সঠিক
  • ও বিশুদ্ধ আক্বীদা গ্রহণ ও প্রচার করা।
  • সঠিক আক্বীদা গ্রহণের
  • কথা বলা হ’লে যদি আপনি বলেন,
  • ‘এগুলি ওহাবীদের কথা। ওহাবীদের
  • নিকট
  • থেকে আক্বীদা শিখতে হবে না।
  • এদেশে ইসলাম প্রচার
  • করেছে ওলী-আউলিয়াগণ। এতদিন
  • পর ওহাবীরা এসেছে নতুন
  • করে আক্বীদা শিখাতে’? এসব
  • উক্তি করে আপনি নিজেকে দলীয়
  • সংকীর্ণতার কুটিল
  • পঙ্কিলে নিমজ্জিত করলেন। পবিত্র
  • কুরআনের আয়াত ও রাসূল (ছাঃ)-এর
  • হাদীছ ‘ওহাবী’ অথবা ‘সুন্নী’ এ রকম
  • বিভাজন করে বর্ণিত হয়নি।
  • এক্ষেত্রে আপনি ঈমানদার কি-
  • না সেটাই বিবেচ্য বিষয়।
  • বিদ‘আতী ও কুফরী আক্বীদা-আমল
  • সমর্থন
  • করা হ’লে তিনি পাক্কা ‘সুন্নী’। আর
  • তার
  • বিরোধিতা করলে কা‘বা মসজিদের
  • ইমাম ছাহেব হ’লেও তিনি ওহাবী।
  • কি চমৎকার অভিধা! এসব
  • গোঁড়ামি ছেড়ে পরকালীন
  • নাজাতের লক্ষ্যে সকলকে কুরআন ও
  • হাদীছে বর্ণিত ছহীহ আক্বীদা গ্রহণ
  • করতে হবে। ভ্রান্ত আক্বীদা ও
  • শয়তানী পথ ছাড়তে হবে।
  • এছাড়া কোন গত্যন্তর নেই।
  • উপসংহার :
  • বাংলা ভাষায় রচিত কাব্য ও
  • কবিতায়, গযল ও গানে আল্লাহ ও
  • রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে ভ্রান্ত
  • আক্বীদা আবহমান কাল
  • থেকে প্রচার হয়ে আসছে। প্রচলিত
  • শত শত গযল ও ইসলামী সঙ্গীতের মধ্য
  • থেকে কয়েকটি মাত্র দৃষ্টান্ত স্বরূপ
  • উল্লেখ করা হয়েছে। সকল দলীয়
  • সংকীর্ণতার
  • ঊর্ধ্বে থেকে পরকালীন
  • মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে অতীতের ভুল
  • সংশোধন করে নেওয়া মুমিনের
  • দায়িত্ব ও কর্তব্য।
  • আসুন! সে লক্ষ্য
  • সামনে রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের
  • প্রতি আমাদের দায়-দায়িত্ব পালন
  • করি। নির্ভুল আক্বীদা প্রতিষ্ঠায়
  • পারস্পরিক সহযোগিতা দান করি।
  • আল্লাহ তাওফীক দান করুন- আমীন!
  • সহকারী অধ্যাপক, ফজিলা রহমান
  • মহিলা কলেজ, কৌরিখাড়া,
  • পিরোজপুর।
  • [1] . মুহাম্মদ শাহাব উদ্দীন, সাহিত্য
  • সাধনায় কয়েকজন মুসলিম
  • প্রতিভা (ঢাকা : ইসলামিক
  • ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ডিসেম্বর
  • ২০০৪), পৃঃ ১৭।
  • [2] . ঐ, পৃঃ ১৮।
  • [3] . তদেব।
  • [4] . ঐ, পৃঃ ৩৪।
  • [5] . ঐ, পৃঃ ৩৫।
  • [6] . ঐ, পৃঃ ২০।
  • [7] . বাংলা সহজপাঠ, পঞ্চম শ্রেণী,
  • বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড,
  • ঢাকা, পুনর্মুদ্রণ: নভেম্বর, ২০১২,
  • পৃঃ ৯৬-৯৭; ইসলাম ও নৈতিক
  • শিক্ষা ৪র্থ শ্রেণী, জাতীয়
  • শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক
  • বোর্ড,ঢাকা।
  • [8] . ডাঃ এম.এ. সামাদ, আমার প্রিয়
  • ইসলামী গান, পৃঃ ৭৮, প্রথম প্রকাশ :
  • মার্চ ২০০৫। প্রকাশক : সাহিত্য
  • সোপান, বগুড়া।
  • [9] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১৪।
  • [10] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১০।
  • [11] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৭১।
  • [12] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৭।
  • [13] . শাহী গযল বা হিযবুল্লাহ
  • জাগরণী, পৃঃ ১৭;
  • ছারছীনা দারুচ্ছুন্নাত লাইব্রেরী,
  • নেছারাবাদ, পিরোজপুর।
  • [14] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৭।
  • [15] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৯।
  • [16] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৪৭।
  • [17] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৭।
  • [18] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৬২।
  • [19] . প্রাগুক্ত, পৃঃ ৭০।
  • [20] . মোঃ আবু তাহের বর্ধমানী,
  • অধঃপতনের অতল তলে, পৃঃ ৬৪।
  • [21] . ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ
  • জাহাঙ্গীর, হাদীসের
  • নামে জালিয়াতি, পৃঃ ২৫৯ তৃতীয়
  • প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ২০০৮।
  • [22] . ছহীহ বুখারী হা/৪০১।
  • [23] . মুসলিম; মিশকাত হা/৫৭০১।

Previous
Next Post »
Design by MS Design

Powered by Blogger